স্বদেশ ডেস্ক:
সিরাজগঞ্জের নরিনা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) আসন্ন নির্বাচনে সংরক্ষিত মহিলা সদস্য প্রার্থী হিসেবে এলাকার ভোটারদের কাছে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছিলেন নাজমা খাতুন।তার সহযোগী হিসেবে ছিলেন স্বামী। এদিকে প্রায় তিন দিন আগে তাদের ছেলে ‘আত্মহত্যা’ করেন।অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যা এড়াতে ছেলের লাশ টয়লেটের ট্যাঙ্কে ফেলে প্রচারণা চালাতে থাকেন তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার নরিনা গ্রামে। নিহত ছেলের নাম করীম (১৮)। তার বাবার রাম আলহাজ্ব। গত মঙ্গলবার রাতে কোনো এক সময় নিজের কক্ষে আত্মহত্যা করেন।
খোঁজ নিয়ে আরও জানা গেছে, ছেলের আত্মহত্যার বিষয়টি বুঝতে পেরে নাজমা খাতুন সঙ্গে সঙ্গে স্বামীকে জানান। পর ঝামেলা এড়াতে তারা ছেলের লাশ টয়লেটের ট্যাঙ্কে ফেলে মাটিচাপা দিয়ে সকাল থেকে ইউপি নির্বাচনের ভোট প্রার্থনায় বের হন। ঘটনার প্রায় ৩ দিন পর আজ শুক্রবার এলাকাবাসীর সঙ্গে নিহতের মায়ের কথোপকথনের মাধ্যমে বিষয়টি জানাজানি হয়।
পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছেন নিহতের বাবা-মা। তারা আরও জানান, দুই বছর আগে ছেলের বউ চিরকুট (আমার মৃত্যুর জন্য কউ দায়ী নয়) লিখে আত্মহত্যা করেন। তখন সেই ঝামেলা শেষ করতে বিভিন্ন খাতে ‘ম্যানেজের’ নামে ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা খরচ হয়। সেই টাকা পরিশোধ করতে হয় বাড়ি বিক্রি করেন। এখন ছেলে আত্মহত্যা করার পর লোক জানাজানি হলে যদি আবারও মোটা অর্থ জরিমানা দিতে হয় সেই শঙ্কায় ছেলের লাশ টয়লেটের ট্যাঙ্কে ফেলে দেন।
ঘটনা জানাজানির পর শাহজাদপুর থানা পুলিশ উপস্থিত হয়ে আজ বিকেলে নিহতের অর্ধ্বগলিত লাশ উদ্ধার করে। সেই সঙ্গে নিহতের বাবা আলহাজ্ব, মা নাজমা খাতুনসহ চারজনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন।
এ বিষয়ে নরিনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুল হক মুন্সী বলেন, ‘চার দিন ধরে ছেলের লাশ গুম করে রেখে নির্বাচনে ভোট প্রার্থনা করছে, সত্যি এটা আশ্চর্যজনক। আমরা একবারের জন্যও অনুমান করতে পারিনি তারা এমন ঘটনা ঘটাতে পারে।’
শাহজাদপুর থানার পরিদর্শক (অপারেশন অ্যান্ড কমিনিউটিং পুলিশিং) আব্দুল মজিদ বলেন, মৃতদেহ উদ্ধার করে সন্ধ্যায় ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট আসার পরে নিহতের মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।